History of Vallentine’s Day:রোমিওদের কাছে ফেব্রুয়ারি মাস মানেই প্রেমের মাস। হাতে গোলাপ, মনে বসন্ত। সবকিছু নিয়ে শুরু হয়ে যায় একটা বছরের প্রেমের সপ্তাহ। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রেমিকদের কাছে রোমান্টিক হয়ে উঠবে।রোজ ডে দিয়ে ভ্যালেন্টাইন্স উইক (valentines week) শুরু, এরপর প্রোপোজ ডে, চকোলেট ডে, টেডি ডে, প্রমিস ডে, হাগ ডে, কিস ডে এবং টানা এক সপ্তাহের প্রেম পর্বের সমাপ্তি হয় ভ্যালেন্টাইন’স ডে তে।প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বজুড়ে পালিত হয় দিনটি।
কারা পালন করে ভ্যালেন্টাইন্স উইক? (who celebrated Vallentine’s week?)
এই বিশেষ দিনটিতে প্রত্যেকেই তার প্রিয়জনের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করে। তবে বেশিরভাগ মানুষেরই ধারনা হলো, এই দিনটি কেবল মাত্র প্রেমিক-প্রেমিকা ও দম্পতিদের জন্য। এ ধারনাটি ভুল। এই দিনে যে কেউ যে কাউকেই মূলত তাদের প্রিয়জনকে, তাদের আপনজনকে শুভেচ্ছা জানাতে পারেন। তাদেরকে নিয়ে ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করতে পারেন। হতে পারে তারা পরিবারের সদস্য, বন্ধু, ভাই, বোন এবং অন্যান্য প্ৰিয় ব্যক্তি, যারা আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে আছেন।
ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র ইতিহাস (History of Vallentine’s day):
প্রতিবছরই এই ফেব্রুয়ারী মাসে 7 থেকে 14 তারিখ পর্যন্ত গোটা এক সপ্তাহ জুড়ে প্রেমের বসন্তে মেতে ওঠেন। কিন্তু, কেন পালন করা হয় এই ভ্যালেন্টাইন’স ডে? তা প্রায় কেউই জানেন না। ভ্যালেন্টাইন্স ডের ইতিহাস (History of Vallentine’s Day) জানুন এই প্রতিবেদনে।
পঞ্চম শতাব্দীর শেষের দিকে পোপ গেলাসিয়াস ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন’স ডে হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারে এই ভালবাসার বিশেষ দিনটির নামকরণ করা হয়েছে। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন তার প্রেমের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাই সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের প্রেমের জন্য আত্মত্যাগকে স্বীকার করে মানুষেরা তাকে একটা দিন উৎসর্গ করে।
তৃতীয় শতাব্দীতে রোমের বাসিন্দা, পুরোহিত, এবং চিকিৎসকরা সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগের স্মরণে এই দিনটি উদযাপন করেছিল। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন একজন ধর্ম প্রচারকও ছিলেন। তিনি রোমান সৈন্যদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য বিবাহের অনুষ্ঠানও করতেন।
তবে সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস বিশ্বাস করতেন, অবিবাহিত সৈন্যরা বিবাহিতদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। তিনি তাই সৈন্যদের বিয়ে করা নিষিদ্ধ করেছিলেন। এরজন্য তিনি একটি আইনও তৈরি করেছিলেন সে বিষয়ে। আইনে বলা হয় , যারা সেনাবাহিনীতে চাকরি করে তারা বিয়ে করতে পারবেনা।
সেন্ট ভ্যালেন্টাইন যখন এই আইন সম্পর্কে জানতে পারেন তখন তিনি এর তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি আইনটিকে সেনাদের প্রতি অন্যায় বলে ঘোষনা করেন। তিনি তখন সকল সৈন্যদের গোপনে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে থাকেন এবং বিয়ের পাশাপাশি তিনি অন্যান্য লোকেদের মধ্যেও ভালবাসার অনুভুতি জাগাতে শুরু করেন।
কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত, দ্বিতীয় ক্লডিয়াস সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের এ সকল গোপন কাজের কথা জানতে পারেন এবং ফলস্বরূপ ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ড দেন।
তবে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে নিয়ে সব থেকে মজার একটি গল্প রয়েছে। ধর্ম প্রচারের মামলায় যখন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন অভিযুক্ত ছিলেন, সেসময় তার চিকিৎসায় একজন কারারক্ষীর অন্ধ মেয়ের দৃষ্টিশক্তি তিনি ফিরিয়ে দেন। দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে সেই কারারক্ষী পরিবার সহ আরও বেশ কয়েকটি পরিবার খ্রীস্টধর্ম গ্রহণ করেন। পাশাপাশি মেয়েটির সাথে ভ্যালেন্টাইনের একটি বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক তৈরি হয়।
সেখানকার রাজার কানে সে খবর পৌঁছে যায়। আইন অমান্য করে ধর্ম প্রচার করার জন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যু কার্যকর হওয়ার আগে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন সেই মেয়েটিকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠি লেখেন। যেখানে লেখা ছিল ” love from your Vallentine”.
চিঠির শেষের এই অংশটি থেকেই মূলত মানুষ তার নামটিকে ভালবাসার প্রতীক হিসেবে পেয়েছে। পরবর্তী কালে পোপ গেলাসিয়াস এই দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন’স ডে হিসেবে ঘোষণা করেন। আর তারপর থেকেই গোটা বিশ্বে ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালিত হয়ে আসছে। এটাই হল ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস (History of Vallentine’s Day)
আরও পড়ুন: ভাইফোঁটা কেনো পালিত হয়! জানুন ইতিহাস।
কোনদিন কি দিন রয়েছে :
- রোজ ডে (Rose Day)- ৭ ফেব্রুয়ারি।
- প্রস্তাব দিবস (Propose Day)- ৮ ফেব্রুয়ারি।
- চকোলেট ডে (Chocolate Day)- ৯ ফেব্রুয়ারি।
- টেডি ডে (Teddy Day)- ১০ ফেব্রুয়ারি।
- প্রতিশ্রুতি দিবস (Promise Day)- ১১ ফেব্রুয়ারি।
- আলিঙ্গন দিবস (Hug Day)- ১২ ফেব্রুয়ারি।
- চুম্বন দিবস (Kiss Day)- ১৩ ফেব্রুয়ারি।
- ভালোবাসা দিবস (Valentine’s Day)- ১৪ ফেব্রুয়ারি।
বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স ডে (vellentine’s day of Bengal):
বাঙালিদের কাছে স্বরস্বতী পূজাই হলো vallentine’s day। এবছর আবার স্বরস্বতী পূজার দিন ভ্যালেন্টাইন্স ডে পড়েছে। তাই বাংলার প্রেমিক – প্রেমিকাদের কাছে দিনটি আরো রঙিন হয়ে উঠবে তা বলাই যায়।
তবে বর্তমান সমাজের কাছে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র অর্থ আলাদা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেমের এই পবিত্র দিনটিকে কিছু ছেলে – মেয়ে কলুসিত করে তুলেছে। অতি আধুনিকতার ফলে সমাজ ব্যবস্থার এই অবনতি।