হিন্দুদের প্রধান উৎসবের মধ্যে ভাইফোঁটা (Bhai phota 2023) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উত্সব। কালীপূজা বা দীপাবলির ২ দিন পরে ভাইফোঁটা আসে। এই বিশেষ দিনে বোনেরা তাদের ভাইদের কপালে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘায়ু কামনা করে যমরাজের কাছে। স্কন্দপুরাণ অনুযায়ী, এই দিনে যমরাজকে প্রসন্ন করতে পারলে কাঙ্খিত ফল লাভ করা যায়।
এ বছর কবে ভাইফোঁটা :
এই বছর ভাইফোঁটা উৎসব দুদিন পড়েছে ।১৪ এবং ১৫ নভেম্বর। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি ১৪ নভেম্বর দুপুর ২:৩৬ মিনিট থেকে শুরু হচ্ছে এবং শেষ হবে ১৫ নভেম্বর বেলা ১: ৪৭ মিনিটে।
কোন দিকে মুখ করে ফোটা নেওয়া হয় :
ফোঁটা নেওয়ার ক্ষেত্রে সময় ও দিকের সম্পর্ক রয়েছে। শাস্ত্র অনুযায়ী, পূর্ব দিকে মুখ করে ফোঁটা নেওয়া শুভ। তবে অসুবিধা থাকলে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে ফোঁটা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কখনই দক্ষিণ দিকে মুখ করে ভাইফোঁটা নেওয়া উচিত নয় । এটা অত্যন্ত অশুভ বলে মনে করা হয়।
অন্যান্য নাম :
ভাইফোঁটা ভাই-বোনের উৎসব। এই ভাইফোঁটা শুধু হিন্দুদের নয়। সারা দেশের বহু রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন নামে এই উৎসব পালিত হয়। দেশের সমস্ত ভাইবোনেরা একে অপরের সুখ-শান্তি এবং দীর্ঘায়ুর জন্য প্রার্থনা করেন। এই উৎসব ভ্রাতৃদ্বিতীয়া নামে পরিচিত। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব বিভিন্ন নামে পরিচিত। হিন্দিভাষীদের কাছে ‘ভাইদুজ’ (Bhai Dooj), বাঙালিদের ‘ভাইফোঁটা’, মহারাষ্ট্রে ‘ভৌবিজ’, দক্ষিণ ভারতে ‘যমদ্বিতীয়া’ এবং নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব ‘ভাইটিকা’ (Bhai Tika) নামে পরিচিত।
পৌরাণিক কাহিনী :
১. কথিত আছে,এই দিনটিতে কৃষ্ণ নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করে। তারপর কৃষ্ণ তার বোন সুভদ্রার কাছে গেলে সুভদ্রা কৃষ্ণের কপালে জয়ের ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি মুখ করায় । সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন শুরু হয়। ভাইফোঁটার দিন বোনেরা ভাইদের কপালে চন্দনের টিকা বা দইয়ের টিকা বা কাজলের টিকা দিয়ে বলেন – ‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা / যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা / যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা / আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।’
আরও পড়ুন: ভ্যালেন্টাইন্স ডে কোনো পালিত হয়! জানুন ইতিহাস।
২. এই বিশেষ তিথিটি ‘যম দ্বিতীয়া’ নামেও বেশি পরিচিত। এই বিশেষ দিনে যমরাজ বোন যমুনার বাড়ি যায় । সেখানে যমুনার হাতের রান্না করা খাবার খেয়ে যম খুব খুশি হন। তখন বোন যমুনা তাঁর দাদার কাছ থেকে আশীর্বাদ চান। আশীর্বাদ করে যমরাজ যমুনাকে বলেন, যে ভাই আজকের এই বিশেষ তিথিতে তাঁর বোনের বাড়ি গিয়ে বোনের হাতের রান্না খাবে তাঁর অকালমৃত্যুর কোন সম্ভাবনা থাকবে না। আর এই ঘটনার পর থেকে ভাইফোঁটার বিশেষ দিনটি পালন করা হয়ে থাকে।