Bengal Global Business summit 2023: বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ব্রাত্যই থেকে গেল কেন মুর্শিদাবাদ?

Bengal Global Business summit 2023: আবারও বাদ থাকলো মুর্শিদাবাদ।বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (Bengal Global Business summit 2023)থেকে মুর্শিদাবাদের জন্য কিছুই বরাদ্দ থাকলো না।গত ২১ ও ২২ নভেম্বর কলকাতায় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (Bengal Global Business summit 2023) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন সেক্টরের ২৯ জন উদ্যোগী ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।

মুর্শিদাবাদ ভারত তথা বিশ্বের এক ঐতিহাসিক জেলা। এই জেলায় রয়েছে ভাগীরথী-গঙ্গা-পদ্মার জলপথ। রয়েছে উন্নত রেলপথ, সড়কপথ। হাজারদুয়ারি,ইমামবাড়া, লালগোলা, পলাশীর মতো ইতিহাস প্রষিদ্ধ স্থান রয়েছে। অথচ বরাবরের মতো বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ব্রাত্য থেকে গেলো মুর্শিদাবাদ।

মুর্শিদাবাদে শিল্পের জন্য পর্যাপ্ত জমিও রয়েছে।জল রয়েছে। পরিবহন ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ,পরিকাঠামোগত এত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হাতে গোনা কয়েকটি সিমেন্ট কারখানা এবং দু’টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কারখানা ছাড়া মুর্শিদাবাদে আর কোনো বড় কারখানা নেই। তাই মুর্শিদাবাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের হয়ে ভিন্ রাজ্যে কাজে যেতে বাধ্য হন। তাই রাজ্যে শিল্প সম্মেলন হলেই তার দিকে তাকিয়ে থাকেন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারা। কিন্তু একের পর এক শিল্প সম্মেলন পার হয়েছে কিন্তু এই জেলায় শিল্পে কোনোরকম বিনিয়োগ হয়নি।গেল বছরের শিল্প সম্মেলনে রেজিনগর শিল্পতালুকে ই-বাস (E-BUS) কারখানা করার জন্য একটি সংস্থা রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। কিন্তু তা ওখানেই শেষ।তাতে আজও কোন বিনিয়োগ হয়নি। আর এ বারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মুর্শিদাবাদে কোনো বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি বলে ব্যবসায়ী সংগঠনদের অভিযোগ। যার জেরে মূলত হতাশ হয়েছে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারা।

মুর্শিদাবাদ শিল্পকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার আহমদ তালিব বলেন,‘‘আমাদের এই জেলায় বড় শিল্পে বিনিয়োগের বিষয়ে এখনো কিছু জানানো হয়নি। রাজ্য থেকে জানালে আমরা জানাতে পারব।’’

মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সাধারণ সম্পাদক স্বপনকুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ডাক পেয়েছিলাম। উপস্থিতও হয়েছিলাম। সে বার একটি ই-বাস সংস্থার সাথে কারখানা করবে বলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিলো। কিন্তু এ বছর কিছুই হলোনা।আমাদের সামনে অন্য জেলায় বিভিন্ন শিল্প সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও মুর্শিদাবাদের জন্য কিছু হয়নি।’তিনি আরও বলেন,‘‘প্রতি বছর শিল্প সম্মেলন হচ্ছে। কিন্তু মুর্শিদাবাদ কিছুই পাচ্ছে না। অন্য জেলা গুলোতে কেমন শিল্পে বিনিয়োগ আসছে জানি না।আমাদের জেলায়ও বড় কোনো বিনিয়োগ আসছে না। যেজন্য আমাদের জেলা অন্য জেলা গুলোর থেকে পিছিয়ে থাকছে। অথচ আমাদের জেলায় পর্যটনের জন্য বিখ্যাত । অথচ সেই পর্যটনেও কোনও বিনিয়োগ নেই।’’ বহরমপুরের বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় গত তিন মাসে তিন লক্ষধিক মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক নাম নথিভুক্ত করেছেন। এতেই বোঝা যায় কত মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে বাইরে যান। এই পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমাতে হলে শিল্প গড়ে তুলতে হবে, এলাকায় কাজ দিতে হবে। সে জন্য শিল্প দরকার। সেই শিল্প থেকে বার বার বঞ্চিত থাকছে মুর্শিদাবাদ।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০০৮ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রেজিনগরে ১৮৭ একর জমির উপরে একটি শিল্পতালুক গড়ে তুলতে শিলান্যাস করেছিলেন। কিন্তু তারপর দু’এক জন ছাড়া উদ্যোগীরা রেজিনগর শিল্পতালুকমুখী হননি। যার জেরে খা খা করছে এই শিল্পতালুক। যেটা এসেছিলো সেই ই-বাস প্রকল্পও এখনো কার্যকরী হয়নি, যা নিয়ে আশায় বুক বাঁধছিলো জেলার বাসিন্দারা ।

Leave a Comment