২০২০ সালের পর আবার শুরু হচ্ছে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা (Shantiniketan poush mela)। নানা টানাপোড়েন, বিক্ষোভের পর শুরু হচ্ছে বহু প্রতিক্ষিত কবিগুরুর ঐতিহ্যবাহী মেলা।
WBKHABAR.COM: ৩ বছর পর আবারও হচ্ছে শান্তিনিকেতন পৌষমেলা (Santiniketan Poush Mela)। ‘এবারও হচ্ছে না বিশ্বভারতীর (Bisva Bharati) ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা,’ সোমবার বৈঠক শেষে এমনটাই জানিয়ে দিয়েছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট (Santiniketan Trust)। তবে আবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, এবার শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা (Poush Mela 2023) হবে।
এতদিন কেন মেলা হয়নি :
২০২০ সালে করোনার জন্য বন্ধ হয়েছিল পৌষমেলা। তারপর থেকে নানা কারণে আর মেলা হয়নি। পাশে ডাকবাংলো মাঠে ব্যাবসায়ীদের উদ্যোগে মেলা হলেও, তাতে সেই ঐতিহ্য ছিল না। তবে এ বছর শান্তিনিকেতন কর্তৃপক্ষ মেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিলেও, শেষ পর্যন্ত সময় অল্প থাকার জন্য সবটা গুছিয়ে নিয়ে মেলা করা যাবেনা বলে জানান শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার।মূলত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এই পৌষমেলা করে আসছিল ।
বিক্ষোভ :
এবছরও মেলা হচ্ছে না শুনেই একত্রিত হয়ে বিশ্বভারতীতে বিক্ষোভ দেখায় বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ, বোলপুর ব্যবসায়ী সংঘ এবং কবিগুরু হস্তশিল্প মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। এমনকি তারা গেটের তালা ভেঙে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় অফিসের সামনেও চলে আসে এবং সেখানে দীর্ঘক্ষণ তারা বিক্ষোভ দেখায় । কিন্তু তারপরেও বিশ্বভারতী তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে।
আবারও মেলা হবে :
দীর্ঘ বিক্ষোভের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বোলপুরে বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা সহ কয়েকজন বিধায়ক, বোলপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান, একাধিক সরকারি দফতরের আধিকারিকরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকেই আবারও মেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মেলা কেন হবেনা বলা হয়েছিল :
প্রথম দিকে মেলা ছোট আকারে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তারপরও মেলা না হওয়ার প্রসঙ্গে অনিল কোনার জানিয়েছিলেন , “এই ঐতিহ্য বাহী মেলা ছোট আকারে করা যায় না। বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট মিলে এই মেলা করে। নতুন উপাচার্য এসেছেন এক মাসও হয়নি। ওনাকেও সময় দিতে হবে।”
এছাড়া মেলা না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছিলেন , “সবচেয়ে বড়ো কথা, মেলা আয়োজন করতে যে সময় লাগে, এখন তা নেই। খড়গপুর ITI সাহায্যে অনলাইনে ষ্টল বুকিং করার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু এত কম সময়ে তারাও সাহায্য করতে পারবে না। তাছাড়া, গ্রিন ট্রাইবুনালের তরফেও মেলা নিয়ে কোনও নির্দেশ আসেনি। সেজন্য শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ছোট মেলা করা আর্থিকভাবে লাভজনক নয়। সময় কম থাকার জন্য ইলেকট্রিক, পানীয় জল সহ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা থাকার জন্য এ বছর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পক্ষে মেলা আয়োজন করা সম্ভব নয়।”
কোথায় মেলা হবে :
শান্তিনিকেতনের (Santiniketan) পৌষমেলা বিশ্ব বিখ্যাত। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত এই মেলার জন্য সারা বছর মানুষ অপেক্ষা করে থাকে।দেশ-বিদেশের বহু পর্যটকদের আকর্ষণ থাকে এই মেলা । গত ৩ বছরের মতো এবারও না হওয়ায় কথা শুনে মন খারাপের আবহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এবার মানুষের মুখে হাসি ফুটলো।
বীরভূমের (birbhum) জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, “এ বছর মেলা হবে। প্রথমে বিশ্বভারতীর কাছে পূর্বপল্লীর মাঠ চাওয়া হবে। সেখানে না হলে বিকল্প হিসেবে বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠ এ হবে পৌষ মেলা।” প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর এই মাঠেই বিকল্প পৌষ মেলার আয়োজন করে আসছে জেলা প্রশাসন।