মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গির খবর (Dengu news) আক্রান্ত ৯০ হাজার। যা দেশের মধ্যে প্রথম বলেই মত চিকিৎসকদের। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে আক্রান্তের মোট সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজারের কাছাকাছি ছিল।এ বছরের শেষে আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষের গণ্ডি পেরিয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্ত রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এ নিয়ে কিছু বলেনি । শহরের সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হচ্ছে। তবে পুজোর পরে রোগী ভর্তির হার সামান্য বেড়েছে।
পরিসংখ্যান:
‘ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজ়িজ় কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ এর তথ্য অনুযায়ী , সেপ্টেম্বর এর মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৪,১৯৮ জন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সেই সংখ্যা লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে ‘। তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওই পোর্টালে পশ্চিমবঙ্গের কোনও তথ্য নেই।
সূত্রের খবর, গত নভেম্বর এর শুরুতে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার। যার মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের ১৬টি জেলা মিলিয়ে আক্রান্ত মোট ৭৩,৩১৮ জন। সবার উপরে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা ( ১৭,৩৭৪ জন আক্রান্ত )। এর পরে রয়েছে কলকাতা ( ১১,৯৮৫ জন আক্রান্ত ), মুর্শিদাবাদ (৯,৩৮৬ জন আক্রান্ত )। তবে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, এখন তেমন ভাবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে না।
চিকিৎসকের মতামত:
সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বলেন, ‘‘আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে , এটা বলা যাবে না। এখনও রোগীরা ভর্তি হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে সঙ্কটজনকও রয়েছেন। মনে হচ্ছে, ডেঙ্গির প্রকোপ নভেম্বরের শেষের দিকে কমতে পারে। মশারও উপদ্রব হচ্ছে ।’’ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এর মধ্যে যদি আবার বৃষ্টি হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও জোরালো হয়ে উঠতে পারে।
ফর্টিস হাসপাতালের ফেসিলিটি ডিরেক্টর আশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রোগী খুব বেড়েছে যেমন বলা যায় না,আবার একেবারে কমেও গিয়েছে এটাও নয়। এখনও কিন্তু রোগী ভর্তি হচ্ছে। তবে সঙ্কটজনক কেউ নেই।’’ মঙ্গলবারও ওই হাসপাতালে ১০ জন ভর্তি ছিলেন।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অনেকেরই তীব্র জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পরে পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ছে। পুজোর পরে সেই প্রবণতা বেড়েছে। এ দিনেও পিয়ারলেস হাসপাতালে ৩১ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন। সেখানকার চিকিৎসক সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘‘শেষ কয়েক সপ্তাহ ধরে গড়ে প্রায় ৩০ জন করে রোগী ভর্তি থাকছে। সংক্রমণের ছবিটা পুরোপুরি বদলায়নি।’’ উডল্যান্ডস হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা বলেন, ” সংকট জনক দু’-তিন জন থাকলেও সামগ্রিক ভাবে দৈনিক ১৫-২০ জন করে চিকিৎসাধীন,”। তাঁদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার জন্য সিসিইউ-তে রাখা হচ্ছে। এদের প্লেটলেটও অনেক কম থাকছে।’
ডেঙ্গু মোকাবিলায় কি করা উচিত :
এডিস মশা তাড়ানোর জন্য নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন। মশা তাড়াতে ঘরে নিমপাতা পোড়াতে পারেন। খাবারের তালিকায় নিমপাতা রাখতে পারেন।নিমপাতা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ডেঙ্গু মোকাবিলায় সতর্কতার বিকল্প নেই। এজন্য আরও যা করতে পারেন-
১. বাড়ির কোথাও যেন জল না জমে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। কোনও জায়গায় যেন দীর্ঘদিন আবর্জনা না জমে থাকে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। মনে রাখবেন পরিষ্কার জমা জলে মশা ডিম পাড়তে পারে।
২. দিন- রাতে ঘুমানোর সময় মশারির ব্যবহার করুন।
৩. এইসময় বাইরে গেলে হাত-পা ঢেকে থাকে, এমন পোশাক পরুন।
Desclaimer:এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।